২৬ আগস্ট পৃথিবীর জন্ম লগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ মৃত্যুবরণ করেছে তাদের সংক্ষিপ্ত পরিচয় জেনে নিই এক নজরে,
১৭২৩ – আন্তেনি ভান লিউভেনহুক, ওলন্দাজ বিজ্ঞানী ও অণুবীক্ষণ যন্ত্রের উদ্ভাবক
আন্তেনি ভান লিউভেনহুক ছিলেন একজন ওলন্দাজ বিজ্ঞানী, যিনি মাইক্রোস্কোপ বা অণুবীক্ষণ যন্ত্রের উদ্ভাবক হিসেবে বিশ্বে পরিচিত। তিনি সাধারণ মানুষ হিসেবে বিজ্ঞান চর্চার প্রতি গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং অণুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে বিভিন্ন ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র জীবের গবেষণা করেন। লিউভেনহুক প্রথম ব্যক্তি যিনি এককোষী জীব, ব্যাকটেরিয়া এবং রক্তের কোষ আবিষ্কার করেন। তাঁর এই আবিষ্কারগুলি জীববিদ্যার উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
১৯১০ – উইলিয়াম জেম্স, মার্কিন অগ্রজ মনোবিজ্ঞানী ও দার্শনিক
উইলিয়াম জেম্স ছিলেন একজন মার্কিন মনোবিজ্ঞানী ও দার্শনিক, যিনি প্রগতিশীল শিক্ষার ধারণার প্রবক্তা। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের মনোবিজ্ঞান ও দার্শনিক দর্শনের অন্যতম অগ্রদূত হিসেবে পরিচিত। জেম্স এর “প্র্যাগমাটিজম” দর্শন বিশ্বের মনোবিজ্ঞানী ও দার্শনিকদের মধ্যে গভীর প্রভাব ফেলে এবং আজও তার তত্ত্বসমূহ শিক্ষাবিদ ও গবেষকরা অনুসরণ করে চলেছেন।
১৯৩৪ – অতুলপ্রসাদ সেন, বাঙালি কবি, গীতিকার এবং গায়ক
অতুলপ্রসাদ সেন ছিলেন একজন বিশিষ্ট বাঙালি কবি, গীতিকার এবং গায়ক, যিনি তার হৃদয়স্পর্শী গীতিকবিতার জন্য খ্যাত। তিনি বাংলা সংগীতের জগতে এক অমর নাম। অতুলপ্রসাদের গানগুলোতে গভীর সামাজিক এবং দার্শনিক বিষয়বস্তু প্রকাশ পায়, যা বাঙালির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে সমৃদ্ধ করেছে। তাঁর “এমন মানবজনম আর কি হবে” গানটি আজও মানুষের মনকে আলোড়িত করে।
১৯৬১ – চারুচন্দ্র ভট্টাচার্য, প্রখ্যাত অধ্যাপক ও লেখক
চারুচন্দ্র ভট্টাচার্য ছিলেন একজন প্রখ্যাত অধ্যাপক ও লেখক, যিনি বাংলা সাহিত্য ও শিক্ষাক্ষেত্রে অমূল্য অবদান রেখেছেন। তিনি তাঁর লেখায় বাংলা ভাষার গভীরতা ও সৌন্দর্যকে ফুটিয়ে তুলেছেন এবং ছাত্রদের মাঝে জ্ঞানবিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহ জাগিয়ে তুলেছেন। তাঁর রচিত গ্রন্থসমূহ আজও শিক্ষার্থী ও পণ্ডিতদের মধ্যে সমাদৃত।
১৯৮২ – সুশোভন সরকার প্রখ্যাত বাঙালি ঐতিহাসিক
সুশোভন সরকার ছিলেন একজন প্রখ্যাত বাঙালি ঐতিহাসিক, যিনি ইতিহাসের বিভিন্ন শাখায় অবদান রেখেছেন। তাঁর লেখা ইতিহাসের বইগুলোতে বাঙালি জাতির ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ও সংস্কৃতির বিষদ চিত্র পাওয়া যায়। সুশোভন সরকার বাংলা ইতিহাস চর্চায় এক অনন্য নাম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।
১৯৮৮ – মন্মথ রায়, প্রগতিবাদী নাট্যকার ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব
মন্মথ রায় ছিলেন একজন প্রগতিবাদী নাট্যকার ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, যিনি বাঙালি নাট্যজগতকে সমৃদ্ধ করেছেন। তিনি তার নাটকগুলোর মাধ্যমে সামাজিক সমস্যাগুলো তুলে ধরেছেন এবং সমাজ পরিবর্তনের বার্তা দিয়েছেন। মন্মথ রায়ের নাট্যচর্চা বাঙালি সংস্কৃতিতে এক নতুন ধারার সূচনা করেছে।
২০০৩ – বিমল কর, ভারতীয় বাঙালি লেখক ও ঔপন্যাসিক
বিমল কর ছিলেন একজন ভারতীয় বাঙালি লেখক ও ঔপন্যাসিক, যিনি বাংলা সাহিত্যে তাঁর স্বতন্ত্র স্থান করে নিয়েছেন। তার উপন্যাস ও ছোটগল্পগুলোতে জীবনের গভীরতা ও মানবিকতার প্রকাশ দেখা যায়। বিমল করের লেখনীতে বাঙালি সমাজের প্রতিচ্ছবি স্পষ্ট হয়ে ওঠে, যা তাকে বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ লেখক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
২০০৬ – সুবোধ রায় স্বাধীনতা সংগ্রামী, কমিউনিস্ট নেতা ও কমিউনিস্ট আন্দোলনের বিশিষ্ট গবেষক
সুবোধ রায় ছিলেন একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী, কমিউনিস্ট নেতা ও কমিউনিস্ট আন্দোলনের বিশিষ্ট গবেষক। তিনি ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছিলেন এবং স্বাধীনতা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। সুবোধ রায়ের রাজনৈতিক চিন্তাধারা ও নেতৃত্ব কমিউনিস্ট আন্দোলনে নতুন দিশা দিয়েছে।
২০২১ – গৌরী ঘোষ, প্রখ্যাত বাঙালি বাচিক শিল্পী
গৌরী ঘোষ ছিলেন একজন প্রখ্যাত বাঙালি বাচিক শিল্পী, যিনি তাঁর কণ্ঠের জাদু দিয়ে শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছেন। তিনি বাচিক শিল্পের মাধ্যমে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের সৌন্দর্যকে তুলে ধরেছেন। তাঁর সুললিত কণ্ঠে আবৃত্তি করা কবিতাগুলি বাংলা সংস্কৃতির একটি অমূল্য অংশ হয়ে থাকবে।
এই সকল ব্যক্তিত্বদের মৃত্যু তাদের অবদানকে শেষ করতে পারেনি, বরং তাদের স্মৃতি এবং কাজগুলি আজও জীবিত এবং অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে রয়ে গেছে।
Leave a Reply