
২৬ আগস্ট পৃথিবীর জন্ম লগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ জন্ম গ্রহণ করেছে তাদের সংক্ষিপ্ত পরিচয় এক নজরে জেনে নেই,
১৬৭৬ – রবার্ট ওয়ালপোল, একজন ব্রিটিশ রাষ্ট্রনায়ক। (মৃ.১৭৪৫)
রবার্ট ওয়ালপোল ছিলেন ব্রিটেনের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পরিচিত। তিনি ১৭২১ থেকে ১৭৪২ সাল পর্যন্ত ব্রিটেনের প্রথম লর্ড অব ট্রেজারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, যা তাকে কার্যত দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছিল। তার নেতৃত্বে ব্রিটিশ রাজনীতি স্থিতিশীলতা পেয়েছিল, যা তাকে ব্রিটিশ ইতিহাসে একজন গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
১৭৪৩ – অঁতোয়ান লাভোয়াজিয়ে, ফরাসি রসায়নবিদ এবং জীববিজ্ঞানী। (মৃ.১৭৯৪)
অঁতোয়ান লাভোয়াজিয়ে ছিলেন আধুনিক রসায়নের জনক। তিনি প্রথমবারের মতো অক্সিজেন এবং হাইড্রোজেনের অস্তিত্ব প্রমাণ করেন এবং রাসায়নিক পদার্থগুলির মৌলিক তত্ত্ব বিকাশ করেন। তার কাজের মাধ্যমে রসায়নে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির প্রবর্তন ঘটে এবং রসায়নের আধুনিক যুগের সূচনা হয়।
১৭৯৪ – অ্যান্তনি ল্যাভোসিয়ে, ফরাসি রসায়নবিদ ও অক্সিজেন আবিষ্কর্তা।
অ্যান্তনি ল্যাভোসিয়ে ছিলেন অক্সিজেনের আবিষ্কারক এবং আধুনিক রসায়নের অগ্রদূত। তার গবেষণায় প্রমাণিত হয় যে অক্সিজেন একটি মৌলিক উপাদান, যা আগুনের প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও, তিনি রাসায়নিক বিক্রিয়া এবং ভর সংরক্ষণ সূত্রের আবিষ্কার করেন।
১৮৬৯ – দীনেন্দ্রকুমার রায়, রহস্য কাহিনীকার ও সম্পাদক।
দীনেন্দ্রকুমার রায় ছিলেন বাংলা সাহিত্যের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব, যিনি রহস্য কাহিনী লেখায় বিশেষ পারদর্শী ছিলেন। তিনি অনেক জনপ্রিয় রহস্য উপন্যাস লিখেছেন যা আজও পাঠকদের মধ্যে সমাদৃত। তার সাহিত্যকর্ম বাংলা সাহিত্যকে একটি নতুন মাত্রা প্রদান করেছে।
১৮৭৩ – মার্কিন বেতার ও টিভি উদ্ভাবক ডি ফরেস্ট।
ডি ফরেস্ট ছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একজন প্রখ্যাত উদ্ভাবক, যিনি বেতার ও টেলিভিশন প্রযুক্তির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তার আবিষ্কারগুলি আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার ভিত্তি স্থাপন করেছে এবং গণমাধ্যমের জগতে বিপ্লব এনেছে।
১৮৮০ – গিইয়োম আপলিনের, ইতালীয় বংশোদ্ভুত ফরাসি লেখক, কবি, নাট্যকার এবং সমালোচক। (মৃ.১৯১৮)
গিইয়োম আপলিনের ছিলেন আধুনিক ফরাসি সাহিত্যের অন্যতম প্রধান ব্যক্তিত্ব। তিনি ছিলেন একজন কবি, লেখক, নাট্যকার এবং সমালোচক। তার লেখায় প্রতীকবাদ এবং আধুনিকতাবাদের সংমিশ্রণ দেখা যায়। তিনি তার যুগের সাহিত্যে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছিলেন।
১৮৮২ – জেমস ফ্রাংক, জার্মান পদার্থবিদ এবং শিক্ষাবিদ, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী। (মৃ.১৯৬৪)
জেমস ফ্রাংক ছিলেন একজন জার্মান পদার্থবিদ যিনি ফ্রাংক-হের্জ পরীক্ষার জন্য বিখ্যাত। এই পরীক্ষাটি পরমাণুর অভ্যন্তরীণ কাঠামো সম্পর্কে গভীরতর ধারণা প্রদান করে এবং এটি কোয়ান্টাম তত্ত্বের বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল। তিনি ১৯২৫ সালে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।
১৮৮৫ – বিখ্যাত ফরাসী লেখক জুলিয়াস রোমেইন্স।
জুলিয়াস রোমেইন্স ছিলেন একজন ফরাসি লেখক, যিনি তার সাহিত্যিক কাজের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি লাভ করেন। তার লেখায় সমাজের বিভিন্ন সমস্যার গভীর বিশ্লেষণ দেখা যায় এবং তিনি ফরাসি সাহিত্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে আছেন।
১৯০৪ – ক্রিস্টোফার ইশারউড, একজন ইংরেজ ঔপন্যাসিক। (মৃ. ১৯৮৬)
ক্রিস্টোফার ইশারউড ছিলেন একজন প্রখ্যাত ইংরেজ ঔপন্যাসিক, যিনি তার উপন্যাসগুলিতে সামাজিক এবং রাজনৈতিক সমস্যাগুলির উপর আলোকপাত করেছেন। তার লেখা সময়ের সাথে সাথে সমাজের পরিবর্তনের চিত্র তুলে ধরে এবং তিনি সাহিত্যে একটি শক্তিশালী ভূমিকা পালন করেন।
১৯১০ – মাদার তেরেসা, শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ভারতীয় ক্যাথলিক সন্ন্যাসিনী ও ধর্মপ্রচারক দা মিশনারিজ অব চ্যারিটির প্রতিষ্ঠাত্রী। (মৃ.০৫/০৯/১৯৯৭)
মাদার তেরেসা ছিলেন মানবতার সেবায় নিবেদিতপ্রাণ একজন সন্ন্যাসিনী, যিনি দরিদ্র ও অসহায় মানুষের সেবা করে বিশ্বজুড়ে পরিচিতি লাভ করেন। তিনি ১৯৭৯ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন এবং তার প্রতিষ্ঠিত মিশনারিজ অব চ্যারিটি আজও বিশ্বব্যাপী সেবার কাজ করছে।
১৯১৪ – হুলিও কোর্তাজার, বেলজিয়ান বংশোদ্ভুত আর্জেন্টিনীয় লেখক এবং অনুবাদক। (মৃ. ১৯৮৪)
হুলিও কোর্তাজার ছিলেন একজন আর্জেন্টিনীয় লেখক, যিনি লাতিন আমেরিকান সাহিত্যের একজন প্রধান ব্যক্তিত্ব। তার লেখা বাস্তবতা এবং কল্পনার মিশ্রণে অনন্য ছিল এবং তিনি সাহিত্য জগতে একটি স্থায়ী প্রভাব রেখেছেন।
১৯২০ – ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গের বাংলা চলচ্চিত্রের অত্যন্ত জনপ্রিয় অভিনেতা। (মৃ.০৪/০৩/১৯৮৩)
ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন বাংলা চলচ্চিত্রের একজন জনপ্রিয় অভিনেতা, যিনি তার অভিনয় দক্ষতা এবং কমেডি প্রতিভার জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। তার অভিনীত চলচ্চিত্রগুলি আজও দর্শকদের মনোরঞ্জন করে এবং তিনি বাংলা চলচ্চিত্রে একটি স্থায়ী স্থান অধিকার করে আছেন।
১৯৪১ – বারবেট শ্রোডার, সুইস চলচ্চিত্র পরিচালক এবং প্রযোজক।
বারবেট শ্রোডার একজন সুইস চলচ্চিত্র পরিচালক এবং প্রযোজক, যিনি তার কাজের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি লাভ করেছেন। তার চলচ্চিত্রগুলি সমাজের বিভিন্ন সমস্যার উপর আলোকপাত করে এবং তিনি তার অভিনব কাহিনী বিন্যাসের জন্য প্রশংসিত।
১৯৫১ – এডওয়ার্ড উইটেন, ফিল্ড্স পদক বিজয়ী মার্কিন তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী।
এডওয়ার্ড উইটেন একজন প্রখ্যাত তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী, যিনি তার গবেষণার জন্য ফিল্ডস পদক লাভ করেছেন। তিনি স্ট্রিং তত্ত্ব এবং কোয়ান্টাম ক্ষেত্র তত্ত্বের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন এবং তাকে তার প্রজন্মের অন্যতম সেরা পদার্থবিজ্ঞানী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
১৯৭০ – মেলিসা ম্যাকার্থি, একজন আমেরিকান অভিনেত্রী, কমেডিয়ান, লেখক, ফ্যাশন ডিজাইনার এবং প্রযোজক।
মেলিসা ম্যাকার্থি হলেন একজন বহুমুখী প্রতিভাবান আমেরিকান অভিনেত্রী, যিনি তার কমেডি প্রতিভা এবং অভিনয় দক্ষতার জন্য বিশ্বব্যাপী পরিচিতি লাভ করেছেন। তার অভিনীত সিনেমা এবং টেলিভিশন শোগুলি তাকে আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাতি এনে দিয়েছে।
১৯৮০ – ম্যাকোলে কুলকিন, আমেরিকান অভিনেতা।
ম্যাকোলে কুলকিন হলেন একজন আমেরিকান অভিনেতা, যিনি শৈশবে ‘হোম অ্যালোন’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন। তার অভিনয় আজও দর্শকদের মুগ্ধ করে এবং তিনি হলিউডের শিশু তারকাদের মধ্যে অন্যতম।
১৯৮৮ – লার্স স্টিন্ডল, জার্মান ফুটবল খেলোয়াড়।
লার্স স্টিন্ডল হলেন একজন প্রতিভাবান জার্মান ফুটবল খেলোয়াড়, যিনি জার্মানির বিভিন্ন ক্লাব এবং জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন। তার খেলার দক্ষতা এবং নেতৃত্ব গুণ তাকে ফুটবলপ্রেমীদের মধ্যে জনপ্রিয় করেছে।
১৯৯০ – মাতেও মুসাচিও, আর্জেন্টিনার ফুটবলার।
মাতেও মুসাচিও হলেন একজন আর্জেন্টিনীয় ফুটবল খেলোয়াড়, যিনি ডিফেন্ডার হিসেবে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি লাভ করেছেন। তার খেলার দক্ষতা এবং প্রতিভা তাকে আর্জেন্টিনার অন্যতম সেরা ডিফেন্ডার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
১৯৯১ – ডিলান ও’ব্রায়েন, আমেরিকান অভিনেতা।
ডিলান ও’ব্রায়েন একজন জনপ্রিয় আমেরিকান অভিনেতা, যিনি মূলত “টিন উলফ” টেলিভিশন সিরিজ এবং “মেজ রানার” চলচ্চিত্রের জন্য পরিচিত। তার অভিনয়ের দক্ষতা এবং স্বাভাবিক প্রতিভা তাকে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে একজন প্রিয় অভিনেতায় পরিণত করেছে। তিনি শুধু টেলিভিশন এবং চলচ্চিত্রেই নয়, বরং কমেডি এবং নাট্য পরিবেশনার মাধ্যমেও নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করেছেন।
এই ব্যক্তিত্বরা তাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রেখে গেছেন, যা তাদেরকে ইতিহাসে চিরস্মরণীয় করে তুলেছে। তাদের জীবন ও কাজ আমাদের অনুপ্রেরণা যোগায় এবং তারা তাদের সময়ের সীমানা অতিক্রম করে আধুনিক সমাজেও গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব বিস্তার করে চলেছেন।
Leave a Reply