ঢাকায় স্টারলিংক ইন্টারনেট: আমার অভিজ্ঞতা, চ্যালেঞ্জ ও সমাধান

আমার অভিজ্ঞতা: প্রথমবার স্টারলিংক ব্যবহার

আমাদের দেশে ভালো মানের ইন্টারনেট পাওয়া সবসময় সহজ নয়। আমি নিজেও ব্রডব্যান্ড ও মোবাইল নেটওয়ার্কের ধীরগতির কারণে বেশ বিরক্ত ছিলাম। একসময় ভাবলাম, স্টারলিংক কেমন সেবা দেয়? কৌতূহল মেটাতে আমি একটি স্টারলিংক কিট সংগ্রহ করলাম।

ডিশটি ছাদে বসিয়ে কানেক্ট করার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ওয়াইফাই চালু হলো! স্পিড টেস্ট করতেই অবাক হলাম—

  • ডাউনলোড স্পিড: ১০০-১৮০ Mbps (পিক আওয়ারে কমে ৭০ Mbps হতে পারে)
  • আপলোড স্পিড: ২০-৩০ Mbps
  • লেটেন্সি: ৩০-৫০ms (ভিডিও কল ও গেমিংয়ের জন্য ভালো)

কয়েকদিন ব্যবহার করে বুঝলাম, এটি ফাইবার অপটিকের বিকল্প হতে পারে, তবে কিছু সমস্যা রয়েছে।

যে সমস্যাগুলোতে পড়েছি

স্টারলিংক ব্যবহারের কিছু সীমাবদ্ধতা আছে, যা আমার জন্য কিছুটা চিন্তার ছিল।

১. খরচ অনেক বেশি

স্টারলিংক কিটের দাম ৬০০ ডলার (প্রায় ৭০,০০০ টাকা!) এবং মাসিক খরচ ১০০ ডলার (~১১,০০০ টাকা)—যা আমাদের দেশের তুলনায় অনেক বেশি।

২. আবহাওয়া ও সিগন্যাল সমস্যা

ঢাকায় খোলা আকাশ পাওয়া কঠিন। ছাদ বা ব্যালকনিতে ডিশ রাখলেও, মেঘলা দিনে বা বৃষ্টির সময় নেটওয়ার্ক দুর্বল হয়।

৩. বাংলাদেশে অফিসিয়ালি চালু হয়নি

এখনও স্টারলিংক বাংলাদেশে অনুমোদন পায়নি, তাই সরাসরি অর্ডার করা যায় না। তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে আনতে হয়, যা ঝামেলার।

সম্ভাব্য সমাধান ও বিকল্প পরামর্শ

যদি কেউ স্টারলিংক ব্যবহার করতে চায়, তাহলে কিছু বিষয় মাথায় রাখা দরকার—

খোলা জায়গায় সেটআপ করা উচিত, যেন আকাশের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ থাকে।
খরচ বিবেচনা করা দরকার। এটি ব্যয়বহুল, তাই দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ হিসেবে ভাবতে হবে।
সরকারি অনুমোদনের আপডেট রাখা জরুরি। এখন শুধু ব্যক্তিগতভাবে ইমপোর্ট করে আনা সম্ভব।

যদি কেউ কম খরচে ভালো ইন্টারনেট চায়, তাহলে ব্রডব্যান্ড বা 5G সংযোগ ভালো বিকল্প হতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতামত ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা

বিশ্বজুড়ে স্টারলিংক ইতোমধ্যে সাফল্য পেয়েছে। প্রযুক্তি বিশ্লেষকদের মতে, এটি গ্রামীণ এলাকায় ইন্টারনেট বিপ্লব আনতে পারে।

একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্টারলিংক ২০২৪ সালের মধ্যে ৫০টি দেশে চালু হবে এবং এশিয়ার কিছু দেশে এটি অনুমোদন পেয়েছে। বাংলাদেশে চালুর জন্য সরকার ও BTRC-এর অনুমোদন প্রয়োজন।

আমার মতে, ভবিষ্যতে যদি স্টারলিংক সাশ্রয়ী হয় এবং সরকার অনুমোদন দেয়, তবে এটি বাংলাদেশের ইন্টারনেট ব্যবস্থায় নতুন যুগের সূচনা করতে পারে।

আপনার কী মনে হয়? স্টারলিংক বাংলাদেশে চালু হলে আপনি ব্যবহার করতে চাইবেন? কমেন্টে জানান!

1 Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*